আপনার হাঁটার ধরনই বলে দেবে আপনার ব্যক্তিত্ব কেমন

সাধারণত চালচলন দেখে একে অন্যের ব্যক্তিত্ব যাচাই করে সবাই। কিন্তু সাম্প্রতিক বিভিন্ন গবেষণা বলছে, সত্যিকার অর্থেই হাঁটার স্টাইল দেখে ধারণা করা যাবে মানুষটি কেমন।

ধীরগতিতে এদিক-ওদিক তাকিয়ে হাঁটলে কেমন যেন একটু উদাসীন দেখায় যে-কাউকে। বন্ধুরা বলতে শুরু করে ‘দেবদাস হয়ে গেলে নাকি!’ আর দ্রুত হেঁটে গেলে শুনতে হয় ‘কিরে, ট্রেন ছেড়ে দেবে?’ আসলে হাঁটার ধরন দিয়েই ব্যক্তির শারীরিক বা মানসিক অবস্থা অনেকটা বলে দেওয়া যায়। কেউ মাথা নিচু করে ধীরে হাঁটেন, কেউ হনহন করে দ্রুতগতিতে হাঁটেন, আবার কেউবা হাঁটেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে বড় বড় পদক্ষেপ ফেলে, যেন বিশ্ব জয় করে এলেন।

হাঁটার ভঙ্গি আর ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। সেসব গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, কে কীভাবে হাঁটেন, তা ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য—যেমন আধিপত্য বিস্তার করার ক্ষমতা, সামাজিকতা বা সামগ্রিক মানসিকতা প্রকাশ করে। তার মানে আপনি কীভাবে হাঁটছেন তাতে ছাপ থাকে আপনার ব্যক্তিত্বের।

প্রত্যেক ব্যক্তির পৃথিবীকে দেখার, চিন্তা করার, কথা বলার বা ঘুমানোর ধরন যেমন আলাদা হয়, তেমনি হাঁটার ধরনও আলাদা সবার। হাঁটার ভঙ্গি আর ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ নিয়ে বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে। সেসব গবেষণা থেকে উঠে এসেছে, কে কীভাবে হাঁটেন, তা ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্য—যেমন আধিপত্য বিস্তার করার ক্ষমতা, সামাজিকতা বা সামগ্রিক মানসিকতা প্রকাশ করে। তার মানে আপনি কীভাবে হাঁটছেন তাতে ছাপ থাকে আপনার ব্যক্তিত্বের। বিভিন্ন গবেষণামতে হাঁটার ধরনের ওপর ভিত্তি করে মানুষের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলো এবার জেনে নেওয়া যাক।

ধীরে হাঁটা

অনেকেই ভাবেন,

 

যাঁরা ধীরে হাঁটেন, তাঁরা ভীরু ও লাজুক প্রকৃতির। কিন্তু মনোবিদেরা বলছেন, এটি ভুল ধারণা। ধীরে হাঁটা ব্যক্তিরা সাধারণত শান্ত প্রকৃতির হন।

আপনি যদি কাঁধ সোজা করে ও মাথা উঁচু করে ধীরে ধীরে কিন্তু আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে হাঁটেন, তবে আপনার ব্যক্তিত্বের যেসব বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়, সেগুলো হলো, আপনি শান্ত, ক্যারিশমাটিক আর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী। আপনি হাঁটার স্টাইলের মাধ্যমে এমন আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করেন যে সবাই আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়।

আপনি সামাজিক আর বন্ধুবৎসল, কিন্তু আপনি যেহেতু কম কথা বলেন, তাই আপনার কাছের বন্ধু হওয়া সহজ নয়। আপনি নতুন অভিজ্ঞতা উপভোগ করেন, কিন্তু সহজেই বিরক্তও হয়ে যান। একই ভুলের পুনরাবৃত্তি আপনি পছন্দ করেন না। আপনাকে জয় করা সহজ নয়, বিশেষ করে আপনার সঙ্গে একবার যদি কেউ বিশ্বাসঘাতকতা করে।

আর যদি আপনি মাথা নিচু করে খুব ধীরে ধীরে হাঁটেন, তাহলে আপনি অন্তর্মুখী, সদা উদ্বিগ্ন , দুর্বল, ভীত আর অতীতের ভুলগুলোর জন্য সব সময় অনুতপ্ত হয়ে থাকা মানুষ। খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে আবার ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে আপনার বেশ সময় প্রয়োজন হয়।

দ্রুত হাঁটা

দ্রুত হাঁটা মানুষেরা সাধারণত সামাজিক ও হাসিখুশি হন। এ ধরনের লোকেরা ঝুঁকি নিতে ভয় পান না। তাঁরা সমস্যা সমাধানেও পটু হন। আপনি বহির্মুখী হওয়ায় নতুন অভিজ্ঞতাকে সহজেই গ্রহণ করে নেন। আপনি আপনার রুটিন কাজগুলো সম্পাদন করেন দ্রুতটার সঙ্গে। আপনি একজন বন্ধুপ্রিয় মানুষ, যিনি সহজেই নতুন কারও সঙ্গে কোনো প্রকার সংকোচ বা দ্বিধা ছাড়াই মিশতে পারেন।

আপনি নির্ভীকভাবে আপনার চিন্তা বা মতামত প্রকাশ করতে পারেন। অন্য মানুষের হস্তক্ষেপ বা অযথা নাটক থেকে নিজের জীবনকে মুক্ত রাখতে আপনি। আর সেই সঙ্গে চান সক্রিয় থাকতে সব সময়। যাঁরা আপনার থেকে আলাদা, তাঁদের সঙ্গে আপনার গতি বা শক্তির মাত্রা মেলাতে কখনো কখনো কষ্ট হতে পারে আপনার। যেহেতু তাঁরা আপনার মতো দ্রুতগতির নয়, তাই আপনার সহানুভূতিশীল বা সদয় হতে শিখতে হবে।

বড় বড় পদক্ষেপে হাঁটা

যাঁরা দীর্ঘ পদক্ষেপে হাঁটেন, তাঁদের ব্যক্তিত্ব হয় আত্মবিশ্বাসী ধরনের। আত্মবিশ্বাসী লোকেরা বড় পদক্ষেপ দিয়ে হাঁটেন। তাঁরা কখনো উদ্দেশ্যহীন হন না। প্রতিটি কাজেরই উদ্দেশ্য পরিষ্কার থাকায় এ ধরনের মানুষ কম উদ্বিগ্ন থাকেন। আপনি সব সময় ঠিক করে নেন, আপনাকে কোথায় পৌঁছাতে হবে।

সেটা আপনার হাঁটার স্টাইল দেখেই লোকজন আন্দাজ করতে পারে। তাই তারাও আপনাকে সম্মানের সঙ্গে দেখে। আপনি কৌশল আর বুদ্ধিমত্তা দিয়ে সহজেই যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেন। আপনি আপনার কাজ করার পদ্ধতিতে অত্যন্ত অবিচল। তা ছাড়া এই শ্রেণির মানুষ দৃঢ় প্রকৃতিরও হন।

তথ্যসূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট

ছবি: পেকজেলস ডট কম । 

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *